Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
সমন্বিত খামার স্থাপনে সাহাবুদ্দিন চৌধুরীর সাফল্যগাঁথা
ডাউনলোড

আমাদের দেশ কৃষি প্রধান দেশ। এ দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে মূল চালিকা শক্তি হল কৃষি। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে অগ্রণী ভ’মিকা রাখে প্রগতিশীল কৃষক,কৃষিকর্মী,কৃষিবিজ্ঞানী এবংকৃষিবিদগণ। কৃষি প্রযুক্তি সম্প্রসারন সব থেকে বেশী ত্বরান্বিত হয় প্রগতিশীল কৃষকের মাধ্যমে। কোন প্রগতিশীল কৃষক যদি কৃষি, মৎস্য ও প্রানি সম্পদের সমন্বিত খামারের সক্রিয় অংশগ্রহন করেন তাহলে কৃষির প্রতিটি বিভাগের সুষম উন্নয়ন ও বিস্তার ত্বরান্বিত হয়।

সফল কৃষকের পরিচিতি:
কৃষি, মৎস্য ও প্রানি পালনে সাফল্য অর্জনকারী এমনই একজন প্রগতিশীল কৃষকের নাম- মোঃ সহাবুদ্দিন চৌধুরী, পিতা-মৃত আব্দুল সামাদ চৌধুরী, ইউনিয়ন- হিজলা গৌরবদী, উপজেলা- হিজলা, জেলা- বরিশাল। তার দুই পুত্র সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করেছেন। তিনি নিজেও একজন সুশিক্ষিত আদর্শ কৃষক। সাফল্য কাহিনী জানতে একদিন সাক্ষাৎ করি তার সাথে। তার নিজের মুখ থেকে তার সাফল্য ইতিহাস শোনা যাক-

প্রশ্নঃ-আপনার কৃষি পেশায় আসার কারণ?
ছোট বেলায় পড়ালেখার পাশাপাশিপিতার সাথে নিজেদের জমিতে কৃষি কাজে সহযোগিতা করতাম। পরবর্তিতে শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকরির পিছনে না ছুটে পরিকল্পণা করলাম, নিজের জমিতে কৃষি খামার গড়ে তুলব। সেই মোতাবেক কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করি ও পরামর্শ গ্রহণ করি। এছাড়া বিভিন্ন সফল খামার ভ্রমণ করি এবং বিভিন্ন মিডিয়ার প্রতিবেদন  দেখে প্রথমে কৃষি কাজ শুরু করি। তারপরে মৎস্য ও প্রাণির খামার গড়ে তুলি। এভাবেই আমার খামার বৃদ্ধি করতে থাকি।

প্রশ্ন: আপনার খামারের আয়তন কত?
আয়তন প্রায় ৮৫ একর।

আপনার সমন্বিত খামারে কি কি আছে?
্তার এই প্রায় ৮৫ একরের ফার্মে ব্রয়লার, লেয়ার ও টার্কি মুরগী ফার্ম, ছাগল ও গরুর খামারের পাশাপাশি দুই বিঘা জমির হ্যাচারিতে পোনা উৎপাদন ও পুকুরে মাছ চাষও করি ।এছাড়া নারিকেল, কুল, আমড়া, সফেদা, কাঁঠাল, আম পেয়ারা, সুপারি, লিচু, কামরাঙ্গা, জামরুল, কলা ইত্যাদির ফলজ বাগান রয়েছে।আমি বিভিন্ন মাঠ ফসলকরি। জমির সদ্বব্যবহারে আমি বেশ সচেতন। আর তাই তো হ্যাচারি ও পুকুর পাড়ে মৌসুমি সবজি চাষ করি। অন্যদিকে পুকুরের উপর ব্রয়লার খামার স্থাপন করে সমন্বিত মাছ ও মুরগী চাষও করি। খামারের রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে লাগিয়েছিবিভিন্ন ফলের গাছ । এছাড়া নিজের হ্যাচারি থেকে পোনা উৎপাদন করে পুকুরে মাছ চাষ করি।

 


খামার স্থাপনের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত খামারের কেমন উন্নয়ন হয়েছে ?
প্রথমে আমি ১৫ বিঘা জমি নিয়ে খামার শুরু করি। ২ জন অস্থায়ী কর্মচারী ছিল। এখন আমার খামারে ৮৫ একর জমি রয়েছ, যেখানে স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মচারীর সংখ্যা ২০-২৫ জন। বর্তমানে আমার খামার থেকে মাসিক ১-১.৫লক্ষ টাকা আয় হচ্ছে।

কৃষি উন্নয়ন ও নতুন প্রযুক্তি সম্প্রসারনে বর্তমানে আপনি কি কি কার্যক্রম হাতে নিয়েছেন ?
নতুন নতুন জাতের ফসল উৎপাদন করে কৃষকের মাঝে সূলভ মূল্যে বিতরন করি। এছাড়া মৎস্য ও প্রাণী সম্পদের নতুন  নতুন প্রযুক্তি স্থাপন করে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করি।

আপনার খামারে ভ্রমন ও শিক্ষার জন্য কেউ আসে?
হ্যা, আমার খামারে বিভিন্ন স্থান থেকে কৃষক ছাড়াও সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা উদ্বুদ্ধকরন ভ্রমণ এবং পিকনিক করার জন্য অনেক পর্যটক আসেন।

দেশের শিক্ষিত বেকার যুবক ও প্রগতিশীল কৃষকদের উদ্দেশ্যে আপনার উপদেশ কী?
বেকার যুবকদের জন্য আমার পরামর্শ হল তারা শুধু চাকরির পিছনে না ছুটে যাদের সুযোগ আছে তারা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদের খামার স্থাপন করে। দৃঢ় মনোবল ও স্বদিচ্ছা নিয়ে কাজ করলে চাকরি থেকে বেশি আয় করা সম্ভব।

 একজন প্রগতিশীল কৃষক হলেন সাহাবুদ্দিন চৌধুরী। যিনি কৃষি,মৎস্য ও প্রণী সম্পদের উন্নয়নে যেসব কাজ করে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। দেশের অথনৈতিক উন্নয়নে যেসব কাজ করছেন জীবনের শেষ পর্যন্ত সুস্থ থেকে তা যেন সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারেন তার জন্য রইল শুভ কামনা।